ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সম্প্রসারণকাজ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শুরু না করলে মহাসড়কটিতে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা। কাজ বন্ধ থাকায় চলতি বর্ষায় গর্ত সৃষ্টি হয়ে প্রায় চলাচল অনুপযোগী হয়ে উঠেছে এই মহাসড়ক।
গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে এক বৈঠক করেন পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা। এ বৈঠক থেকেই ওই হুমকি দেন তাঁরা।
বৈঠকে পরিবহন মালিকেরা অভিযোগ করেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কিছু অংশ গাড়ি চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় পাঁচ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ১০ থেকে ৩০ ঘণ্টা। এতে সময়ের অপচয় ও ভোগান্তি পোহানো ছাড়াও নষ্ট হচ্ছে গাড়ির চাকা ও যন্ত্রাংশ। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে আর গাড়ি চালানো সম্ভব নয়।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এ কে এম হাফিজ আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মহাসড়কটির কিছু অংশ দিয়ে গাড়ি চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা সে কথাই বলতে এসেছিলেন। আমরা কাল (আজ) শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসব। কীভাবে মহাসড়ক সচল রাখা যায় সেটা নিয়ে আলোচনা করব। সমিতির নেতারাও সে সময় উপস্থিত থাকবেন।’
হাফিজ আক্তার আরও বলেন, ‘বৈঠক শেষ করে (গতকাল) আমি সড়কপথে ঢাকা যাচ্ছি। রাস্তার অবস্থা দেখছি। আসলে কিছু জায়গায় গর্ত আছে। এগুলো দ্রুত ভরাট করে গাড়ি চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে।’
গতকালের বৈঠকে উপস্থিত ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. আবু মোজাফফর বলেন, ‘আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। ওই মহাসড়কে গাড়ি আর চলে না। জোর করে গাড়ি চালালে চাকা ও যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। এখন যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপনের কারণে আদায়কৃত ভাড়ার চেয়েও ব্যয় বেড়ে গেছে। তাই আমরা সড়ক গাড়ি চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানিয়েছি। এ জন্য ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। নইলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া হবে।’
ওই মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের উপব্যবস্থাপক জুলফিকার আহমেদ বলেন, গর্ত ভরাটের কাজ দ্রুত চলছে। বৃষ্টি না হলে আরও তিন-চার দিন লাগবে। এরপর মহাসড়ক গাড়ি চলাচলের পুরোপুরি উপযোগী হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সম্প্রসারণকাজের ১০টি প্যাকেজের মধ্যে সাতটি পেয়েছে চীনা কোম্পানি সিনো হাইড্রো লিমিটেড। বাকি তিনটি পেয়েছে বাংলাদেশি কোম্পানি। সিনো হাইড্রোর কাজের গতি নিয়ে এরই মধ্যে উঠেছে নানা প্রশ্ন। প্রতিষ্ঠানটি কারণে-অকারণে কাজ বন্ধ রাখায় বর্ষার মধ্যে গাড়ি চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে মহাসড়কটি। সম্প্রতি যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রকল্প পরিদর্শনে আসেন। এ সময় তিনিও চীনা কোম্পানির এ কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
3:38 AM
Unknown

Posted in: 

0 comments:
Post a Comment